Sajeeb Wajed Ahmed Joy and Bangabandhu

Sajeeb Wajed Ahmed Joy:

Sajeeb Ahmed Wazed (Bangla: সজীব ওয়াজেদ) (born July 27, 1971), also known as Sajeeb Wazed Joy, is an IT professional who was selected by World Economic Forum as one of the 250 Young Global Leaders of the World. He is the son of Sheikh Hasina Wazed, the current Prime Minister of Bangladesh and the grandson of Sheikh Mujibur Rahman, the first President of Bangladesh

Early life and education

Sajeeb Wazed was born in 1971 during the Bangladesh Liberation War to the eminent Bengali nuclear scientist Dr. M. A. Wazed Miah and Sheikh Hasina Wazed. His birth during the war and subsequent victory of the Bengalis earned him the nickname given by his maternal grandfather, Sheikh Mujibur Rahman, “Joy” which in Bengali means victory.

Wazed was schooled in India. His early days were spent at boarding in St. Joseph’s College Nainital, and later at Kodaikanal International School in Palani Hills, Tamil Nadu. He pursued a Bachelor of Science degree in computer science, physics and mathematics from Bangalore University. Wazed then pursued another bachelor of science degree in computer engineering at the University of Texas, Arlington in the United States. Subsequently, Wazed attended the Kennedy School of Government in Harvard University, where he completed a Masters in Public Administration.

Politics

In 2004, Sajeeb Wazed visited Bangladesh amid speculations that he would be taking up the Sheikh family’s political mantle. He and his wife received a rousing reception as they landed in Shahjalal International Airport. Thousands of people lined Dhaka’s roads to have glimpse of Joy and his wife. During the visit he rejected a letter sent by Tarique Rahman, son of the then Prime Minister and his mother’s arch rival, Khaleda Zia. The letter congratulated Sajeeb’s possible entry into politics.

In 2007, Wazed was selected by the World Economic Forum in Davos as one of the “250 Young Global Leaders of the World”. The forum cited his role as Advisor to the President of the Bangladesh Awami League.

During the 2006–2008 Bangladeshi political crisis and Minus Two controversy, both Sheikh Hasina and Khaleda Zia were arrested by the military backed interim government on charges of corruption and “anti-state” activities. Hasina maintained that the charges were baseless and her detention was part of efforts by the military to keep her out of the political arena in order to pave the way for another period of quasi-military rule in Bangladesh. Sajeeb Wazed began campaigning in the United States and Europe for the release of his mother and other detained high-profile politicians. Hasina was eventually released in June 2008. She subsequently traveled to the United States for medical treatment.

In December 2008, Bangladesh held national elections that saw Sheikh Hasina’s Awami League and its coalition partners secure the biggest parliamentary majority since 1973, capturing 262 seats in the 300 seat parliament, 230 of which went to the Awami League. Sheikh Hasina was sworn in as the 14th Prime Minister of Bangladesh on 6 January 2009. Prior to the elections, Wazed wrote an article in the Harvard International Review in which he outlined a “secular plan” to stem the rise of Islamic extremism in Bangladesh.

Wazed gave an interview to the BBC in February, 2009 in the aftermath of the violent Bangladesh Rifles mutiny. Asked about security threats faced by his mother from tension provoked in the military by the mutiny and whether certain quarters were trying to stage a scenario similar to that of his grandfather’s assassination in 1975 during a coup by junior army officers, Wazed commented that there was a “distinct possibility” of such a situation being intended. He also stressed that security was beefed up at the Prime Minister’s residence and went on to praise his mother’s handling of the mutiny. “This is probably the biggest incident Bangladesh has had since 1975 and our government and the prime minister has handled this compassionately, pragmatically but decisively to bring the situation under control” he said.

Primary membership

On 25 February 2009, Wazed officially joined the Awami League as a primary member of the Rangpur district unit of the party. Awami League Joint General Secretary Mahbubul Alam Hanif handed over Wazed’s membership form to district party leaders. Rangpur is the ancestral home district of his father Wazed Miah.

The move by Wazed to formally join the Awami League was welcomed by many political leaders and commentators, including the Bangladesh Nationalist Party. Senior BNP leader Nazrul Islam Khan gave his party’s official reaction, stating “we see the matter positively”.

Digital Bangladesh

Within days of joining the Awami League as a primary member, Wazed, in his capacity as an IT policy analyst, unveiled the concept paper and action plan for the government’s ambitious “Digital Bangladesh” scheme; to develop a strong ICT industry in Bangladesh and initiate e-governance and IT education on a mass scale. Wazed emphasized the use of information technology to achieve Bangladesh’s development goals. He also noted that the Digital Bangladesh “scheme” would contribute to a more transparent system of government through e-governance, as it would greatly reduce massive bureaucratic corruption in Bangladesh. He also spoke of Bangladesh’s potential to become an IT outsourcing hub in the next few years given its various advantages in a growing young educated population with a “neutral” English accent. Wazed stated that by the 2021, the IT industry can overtake textiles and readymade garments as the principal foreign exchange earner for Bangladesh.

Monday 31 October 2011

ইতিহাসের নৃশংসতম বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান, মওলানা ভাসানীসহ ঘাতক চক্রের ভূমিকা: মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরী (দুই)


ইতিহাসের নৃশংসতম বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান, মওলানা ভাসানীসহ ঘাতক চক্রের ভূমিকা:(দুই) 

মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরী

http://blog.bdnews24.com/dr_mushfique
বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থদের মধ্যে সুপ্ত ধর্মান্ধতা পাকিস্তান প্রীতি
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের সদস্যদের অনেকেই ছিলেন পাকিস্তান আর্মিতে চাকুরী করা ছোটখাটো মধ্যম শ্রেণীর অফিসারেরা জাতিসত্ত্বায় বাঙালি হওয়ার কারণে এদের কাউকে কাউকে অনিচ্ছাকৃত তথা বাধ্য হয়েই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হয়। মুজিব সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের ব্যাপারে কোন নিয়ন্ত্রণ করেননি, এই নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী ছিলো, সমমনা অফিসারদের উচ্চপদে নিয়োগ দিলে এবং পাকিস্তানপন্থী সদস্যদের সামনে আসতে না দিলে স্বার্থান্বেষী সামরিক বাহিনীতে মুজিবের পক্ষে দাঁড়ানোর মত ব্যক্তি থাকতো, পাকিস্তানপন্থী ব্লক মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারতো না। মুজিব ভুল করে সেই বিষধর গোখরা সাপকে দুধ খাইয়েছেন এই ভেবে যে, পাকিস্তানপন্থীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে তারা হয়তো ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে বাংলাদেশমনা হয়ে উঠবে, দেশের জন্য কাজ করবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মুজিব দুর্নীতিবাজ ছিলেন না বলেই সামরিক বাহিনীতে পাকিস্তানপন্থী কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করেননি। কে এম শফিউল্লাহ সেনাপ্রধান ছিলেন বটে কিন্তু তার হাতে প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতা ছিলোনা। কেননা, উপসেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান তার সকল কাজে হস্তক্ষেপ করতেন এবং শফিউল্লাহ কিছুটা দুর্বল মনোবৃত্তি সম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। তাছাড়াও পাকিস্তানী মনোভাবাপন্ন জিয়াদের ব্লকও তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ছিলো, ফলে শফিউল্লাহ বিরুদ্ধেই হয়তো ক্যু সংঘটিত হয়ে যেত। অনেকে কে এম শফিউল্লাহকে দোষারোপ করেন কেন তিনি মুহূর্তে ব্যবস্থা নিলেন না। এই কেন উত্তর আর্মিতে পাকিস্তান থেকে প্রত্যাগত ব্লকের সদস্যাধিক্যের মাঝেই নিহিত। চাইলেই সবসময় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়না। কে এম শফিউল্লাহর আরেকটি দুর্বলতা ছিলো যে জিয়াউর রহমানের কাছে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির উচ্চতর প্রশিক্ষণ ছিলো, যেটি যোগ্যতার বিচারে জিয়াকেই ভবিষ্যতের সেনাপ্রধান বানানোর ক্ষেত্রে একটি বড় প্লাস পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হতে পারত
বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফ সামনাসামনি প্রতিক্রিয়া না দেখালেই ভেতরে ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি ফুঁসছিলেন, যার কারণে সুযোগ পাওয়া মাত্রই ৩রা নভেম্বরের ক্যুয়ের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে বন্দী করেছিলেন, যদিও মূর্খ অর্বাচীন কর্নেল তাহেরের ক্ষমার অযোগ্য হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে জিয়াউর রহমানকে বিভ্রান্ত সিপাহীরা মুক্ত করে নিয়ে আসে এবং জিয়ার নির্দেশেই বাংলাদেশের ইতিহাসের সে সময় জীবিতদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফ এবং তার দুই সহকর্মী এটিএম হায়দার এবং নাজমুল হুদাকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়

মেজর জিয়াউর রহমান পশ্চিম পাকিস্তান ছিলেন অনেক দিন, রিসালপুর মিলিটারি একাডেমিতে ইন্সট্রাকটর হিসেবে। চট্টগ্রামে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে অস্ত্র খালাসের সময় জুনিয়র অফিসারদের তোপের মুখে বাধ্য হয়েই তাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হয়। উল্লেখ্য, জিয়া কোনদিন সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেননি অর্থাৎ তার মধ্যে গা বাঁচানো এবং সুযোগসন্ধানী স্বভাবটি চিরকালই ছিলো। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম খলনায়ক ফারুক রহমান আবুধাবীতে পাকিস্তানী এক আর্মড রেজিমেন্টের স্কোয়াড্রন কমান্ডার ছিলেন, ১২ ডিসেম্বর তিনি পক্ষ বদলে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন, আরেক স্বার্থান্বেষী সুযোগসন্ধানী আব্দুর রশীদ যোগ দেন তার এক মাস আগে। এর আগে পশ্চিম পাকিস্তানেই ছিলেন তিনি,যুদ্ধ যোগ দেন পালিয়ে নয়,ছুটি নিয়ে!উল্লেখ্য রিসালপুরেই জিয়াউর রহমানের সঙ্গে এদের দুজনের প্রথম পরিচয়। অর্থাৎ, বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিলো প্রকৃতপক্ষে সুপ্ত বিপদের সময় দলবদলকারী পাকিস্তানপন্থী ব্যক্তিবর্গের দখলে। মুজিব সামরিক বাহিনীর লোকজনদের পেছনে বিপুল অর্থ খরচ না করে সেই অর্থ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দারিদ্র নিপীড়িত কৃষক শ্রমিক জনগণের পেছনে ব্যয় করতে প্রয়াসী ছিলেন। এতে করে স্বার্থান্বেষী সামরিক বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের অনেকেই মুজিবের ওপর রুষ্ট হয় কেননা তাদের পেছনে অর্থ বরাদ্দ সুযোগ সুবিধা কমিয়ে দিলে তাদের সেই প্রাত্যহিক বিলাসব্যসনের জীবন যাপন করা আর সম্ভব হয়ে উঠবেনা। আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে পূর্বে চাকুরী করার ফলে অন্যান্য পাকিস্তানী অফিসারদের গোঁড়া ইসলামিক মনোভাব এদের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়। মুজিব একজন পাক্কা মুসলমান ছিলেন, কিন্তু গোঁড়া বা ধর্মান্ধ ছিলেন না, তিনি সকল ধর্মের মিলনে বিশ্বাসী ছিলেন এবং এই অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাংলাদেশের মূলনীতিতে সংযোজিত করেছিলেন। এটি সামরিক বাহিনীর গোঁড়া মুসলিমদের মধ্যে চরম মুজিব বিদ্বেষের সৃষ্টি করে
যাদেরকে আমরা বলি মুক্তিযুদ্ধের গর্ব, তাদের অনেকেই স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার নীল নকশাটি করেছিল।মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকারদেরকে পৃথকীকৃত করার কোন উপায় আছে কি ? কর্ণেল তাহের, জেনারেল ওসমানী,জিয়াউর রহমান, মেজর আব্দুর রশিদ ইত্যাদি ব্যক্তিরা যদি মুক্তিযুদ্ধ করে থাকে তো পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যা, মুক্তিযোদ্ধা হত্যা এবং পাকিস্তানী রাজাকারদের পুনর্বাসনে এদের সক্রিয় ভূমিকা কেন ? জেনারেল ওসমানী মনে মনে তীব্র হিন্দু বিদ্বেষী ছিলেন, এর পেছনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকুরী করার সময় পাকিস্তানী আর্মি অফিসারদের মধ্যেকার ভারত হিন্দু বিদ্বেষের বিষয়টি দ্বারা তিনি প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাঁকে এবং জিয়াউর রহমানের কাউকে সেনাপ্রধান না বানিয়ে শফিউল্লাহকে সেনাপ্রধান বানানোর কারণে জেনারেল ওসমানী বঙ্গবন্ধুর ওপর রুষ্ট হন এবং অশোক রায়নার বই থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আলাপ আলোচনায় তার সংশ্লিষ্টতা ছিলো বলে জানা যায়
তবে জিয়াউর রহমানের কথা আলাদা,আন্তর্জাতিক মদদে সে ছিল শেখ হত্যার মাস্টারদের মাস্টার মাইন্ডার। অশোক রায়নার বইইনসাইড দ্যা স্টোরি অব ইন্ডিয়াস্ সিক্রেট সার্ভিসথেকে জানা গেছে বেগম জিয়ার বাড়ির ট্রেস থেকে উদ্ধার করা হয় তিন ঘণ্টা মিটিংয়ের পরে মুজিবের বিরুদ্ধে ক্যু-এর একটি স্ক্রাপ পেপার। কাগজটি যত্নসহকারে গার্বেজ করা হলে একজন গুপ্তচর গৃহভৃত্যের মাধ্যমে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দিল্লীতে পাঠিয়ে দিলে বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করে দেয়ার জন্যএর পরিচালক মি. কাউ পান বিক্রেতার ছদ্মবেশে বাংলাদেশে আসেন। বঙ্গবন্ধু সেটাকে যথারীতি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ওরা আমার সন্তানের মতো। এই চিরকুটে যাদের নাম ছিল, জিয়াউর রহমান, মেজর রশিদ, মেজর ফারুক, জেনারেল ওসমানী এবং মেজর শাহরিয়ার। বঙ্গবন্ধু হত্যা বিচারকালে, বেগম জিয়াকে সাক্ষী হিসেবে আমলে নেয়া কি খুবই অযৌক্তিক ? জিয়ার নাম তো লিস্টেই ছিল। মরনোত্তর বলে তাকে অব্যহতি দেয়ার বিরুদ্ধে উল্লেখ আছে রায়ের ১৩৬ পৃষ্ঠায়
১৫ই আগষ্ট সফল হওয়ার পর রাজাকার শক্তির কেন পুনরুত্থান হয়, যার এক মাত্র কারণ জিয়াউর রহমানের একের পর এক সংবিধানের নানান আইন পরিবর্তন।৭২ সন থেকে রাজাকারদের অনেক অভিভাবকই বাংলাদেশের নানান অঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের সরাসরি কাজটি শুরু করে। খোন্দকার আব্দুল হামিদ যাদের অন্যতম
দৈনিক আযাদ এবং ইত্তেফাকে মর্দে মোমিন স্পষ্টভাষীর ছদ্ম নামে লেখা এই লোকটি জিয়াউর রহমানের মধ্যে একজন পাকিস্তান প্রেমিককে আবিষ্কার করে সবার আগে। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নানান উষ্কানিমূলক লেখা লিখে জনগণকে ইসলামের সেন্টিমেন্ট দিয়ে উস্কিয়েছে দুর্ভিক্ষ,জলপড়া বাসন্তী, মৃত্যু, অরাজকতা, লুটপাট, গণ-ধরপাকড়, সিরাজ শিকদার হত্যা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বিষাদ্গোর। স্পষ্টভাষীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু গোলাম আযমের সঙ্গে লন্ডনে তার মোলাকাত হয় ১৫ই আগষ্টের কিছু আগে। (দ্র: জীবনে যা দেখলাম লেখক গোলাম আযম ) যুদ্ধ বিরোধী আন্তর্জাতিক লবিস্ট, ’৭১ পরবর্তী মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে এই ঘোর মুসলিম লীগারের কলামগুলো৭২-’৭৫ পর্যন্ত জনমনে বিষ ছড়ায়। জিয়াউর রহমানকে সরাসরি অভ্যুত্থানের সাংকেতিক সুরসুড়ি তার কলামে। পরবর্তীতে দুই দুইবার তাকে মন্ত্রী বানায় জিয়াউর রহমান। সুতরাং যারা রাজাকারদের পিতা, তাদের বিচার কেন হবে না? না হলেও অন্তত পাঠ্যপুস্তকে এদের বিষয়ে জানান দেয়া রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব।৭২- স্পষ্টভাষীকে গ্রেফতার করা হলেও অদৃশ্য আঙুলের নির্দেশে ছাড়া পেয়েই সাংবাদিকতা এবং পরোক্ষ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে যা, প্রত্যক্ষ রাজনীতির চেয়েও বিপজ্জনক। আমাদের দেশে কোন কিছুই কেন কখনোই অসম্ভব নয়?
এর সাথে যুক্ত হয় সরকারবিরোধী হরেক রকম গোয়েবলসীয় মিথ্যা প্রচারনা, যেমনঃ

* বিদেশ থেকে প্রচুর সাহায্য আসছে, কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন সব লুটেপুটে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছে
* শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল ব্যাংক ডাকাতি করে পালানোর সময় গুলিতে আহত হয়েছে
* আওয়ামী লীগের লোকজন দুর্নীতি ব্যাংক ডাকাতি করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে
* ত্রাণসাহায্যের বিশাল অংশ আওয়ামী লীগ ভারতে পাচার করে দিচ্ছে এবং নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছে
* বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধংস করে দেয়ার জন্য রক্ষী বাহিনী বানানো হয়েছে, বাহিনীতে প্রচুর ভারতীয়কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং বিপক্ষদের বিনা কারণে মেরে ফেলা হচ্ছে
* ভারত বিভক্তির সময় যে সকল হিন্দু ঘরবাড়ী ছেড়ে ভারতে চলে গিয়েছিল, তারা অচিরেই ফিরে আসবে এবং জমি জমা, বাড়ী ঘরের দখল নিয়ে নিবে
* বাকশালের মাধ্যমে দেশে গনতন্ত্রকে স্তব্ধ করে দিয়ে আওয়ামী লীগ একাই রাজত্ব চালাবে
সকল তথ্য অপরিণত অভিজ্ঞতাহীন তরুণদের দলে ভেড়ানো সন্ত্রাসবাদী ছদ্ম সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের মুখপাত্রগণকন্ঠ”, দ্বিচারী জাতিবিদ্বেষী ভাসানী ন্যাপ এর মুখপাত্রহক কথা”, বামপন্থী চৈনিকদের মুখপাত্রহলিডেএর মতো পত্রিকায় নিয়মিত ভাবে প্রচার করা হতো। কুখ্যাত সি.আই.. এজেন্ট ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের ইত্তেফাকেও এধরনের মিথ্যা প্রোপাগান্ডামূলক খবর প্রচারিত হতো  সকল অপপ্রচারণার কারনে আওয়ামী লীগ তথা মুজিব ১৯৭০ সালে জনপ্রিয়তার যে উচ্চশিখরে উঠেছিলেন, সেই জনপ্রিয়তা ব্যাপক হ্রাস পায় দেশের বহু মানুষ ঐসকল পত্রপত্রিকার মিথ্যে সংবাদ পড়ে বিভ্রান্ত হয়ে দেশের সকল দুর্গতির জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী বলে ভাবতে থাকে। অনেকে এমনও ভাবতে শুরু করে যে -পাকিস্তানেই তারা ভাল ছিল। কেউ কেউ এমনও ভাবতে থাকে, মুজিব এবং ভারতই আমাদের পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিল, একত্রে থাকলে মুসলিম রাষ্ট্রটি অনেক শক্তিশালী হতে পারতো
এদিকে আওয়ামী লীগের মধ্যে ঢুকে থাকা গাদ্দার খন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষী, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, শাহ মোয়াজ্জেম চক্র সক্রিয় ছিল কোনোভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে আবারো একটা সম্পর্কে জড়ানো যায় কিনা সেটা নিয়ে। তাহেরউদ্দিন ঠাকুর(পেশাভিত্তিক ক্রমিক-১৩১, উপদেষ্টা সদস্য বহিঃ প্রচার বিভাগ, তথ্য মন্ত্রনালয়) এবং খন্দকার মোশতাকের বাড়ি ছিলো কুমিল্লায়। একই জেলার মানুষ সুবাদের তাদের মধ্যে চমৎকার ঘনিষ্ঠতা এবং সখ্য গড়ে ওঠে। মাহবুবুল আলম চাষী (ক্রমিক-৬৬৯) ছিলো চট্টগ্রামের মানুষ এরা দুজনে ছিলেন খোন্দকার মোশতাকের ডান হাত। মানুষের আদালতে দন্ড এড়াতে পারলেও তিনি ইতিহাসের দন্ড এড়াতে পারেননি। মক্কায় হজ্জ্ব করতে যাওয়ার পথে তার গাড়িতে গ্যাস লিক হতে শুরু করে এবং দরজা-জানালা বন্ধ সেই গাড়ি থেকে যথাসময়ে বেরুতে না পেরে তার নির্মম মৃত্যু ঘটে। তার শরীর পুড়ে প্রায় ছাই হয়ে গিয়েছিল। তাহেরউদ্দিন ঠাকুর ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একসময়ের অন্যতম প্রিয় শিষ্য এবং তার বিশ্বাসভাজন মন্ত্রী। তিনি ষড়যন্ত্রে পেছন থেকে সক্রিয় ছিলেন, তলে তলে মোশতাকের গোপন বৈঠকে শরিক হতেন
নামকরা সাংবাদিক আবেদ খান তাঁর ইতিহাদের কাছে আমার দায় শীর্ষক কলামে বলেছেন -
তখন বার্তা সম্পাদক মরহুম আসফউদ্দৌলা রেজা। আমার লেখার ওপর তাঁর এতখানি আস্থা ছিল যে তিনি স্ক্রিপ্ট দেখতে চাইতেন না। আমি বাসায় ফিরে ভাবছি একটা দারুণ চাঞ্চল্যকরওপেন সিক্রেটছাপা হবে পরদিন। কিন্তু দেখলাম, পরদিন রিপোর্টটা ছাপা হয়নি। সেই মুহূর্তে আমার কাছেওপেন সিক্রেটসিরিজের চেয়ে পরিস্থিতিটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।পাকিস্তান আমলে একসময় আমার চিফ রিপোর্টার ছিলেন তাহেরউদ্দিন ঠাকুর। তিনি তখন বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রভাবশালী তথ্য প্রতিমন্ত্রী। গেলাম তাঁর কাছে, খুলে বললাম ঘটনার কথা, আশঙ্কার কথা। জানতাম, তাহের ঠাকুর বঙ্গবন্ধুর খুব বিশ্বস্ত। তাই চাইলাম, তিনি যেন বঙ্গবন্ধুকে খুলে বলেন সব কিছু। ১৫ আগস্টে বুঝেছিলাম, কী ভুল জায়গায় কথা বলেছি আমি। ওদিকে রেজা ভাইয়ের সঙ্গে খন্দকার মোশতাকের ছিল দারুণ খাতির। আর খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে ইত্তেফাকের সম্পর্কও ছিল অত্যন্ত নিবিড়
৭৫ মীর জাফর খন্দকার মোশতাকতাহেরুদ্দিন ঠাকুর মাহবুবুল আলম গংয়ের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র

কাজী আব্দুল হান্নান তাঁর সে রাতের হত্যাকাণ্ড শীর্ষক কলামে বলেন

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। সময় তার সেক্রেটারি ছিল পরবর্তীকালের অন্যতম ডাকসাইটে আমলা মাহবুব আলম চাষী। ১৯৭৪ সালে ভয়াবহ বন্যার পর বন্যা-উত্তর কর্মসূচিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বনির্ভর বাংলাদেশ কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এই কর্মসূচির পরিচালক করা হয় মাহবুব আলম চাষীকে। খন্দকার মোশতাক তাকে এই পদে নিয়াগের ব্যবস্থা করে। ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসের শেষদিকে কুমিল্লার বার্ডে এই কর্মসূচির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মোশতাক, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক খুরশিদ আলম, মাহবুব আলম চাষীসহ আরও অনেকে। নিজের চোখে দেখা এই ঘটনার সাক্ষ্য দিয়েছেন খুরশিদ আলম। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বিকেলে একটি আর্মি জিপে সাদা পোশাকে মেজর আবদুর রশিদ এবং অপর এক সামরিক অফিসার রেস্ট হাউসে আসে এবং খন্দকার মোশতাকের কক্ষে প্রবেশ করে। মাহবুব আলম চাষী সময় তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকে নিয়ে সেই কক্ষে যায়। সেখানে তারা ৩০ বা ৪০ মিনিট কথা বলার পর মাগরিবের আজানের আগে সেনা অফিসার দুজন চলে যায়। পরে মে বা জুন মাসে মোশতাকের গ্রামের বাড়ির এলাকায় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা শেষে মোশতাকের বাড়িতে চা-পানের সময় মোশতাক, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর এবং শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কর্মসূচির সমালোচনা করতে থাকে। খন্দকার মোশতাককে সেদিন এসব নীতিনির্ধারণী কর্মসূচির বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক কটাক্ষ করতে দেখা যায়। সে বছর জুন-জুলাই মাসে দাউদকান্দি মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পরিবার পরিকল্পনার এক সম্মেলন হয়। সম্মেলনে মোশতাক, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর এবং বর্তমানের আলী আশরাফ এমপি উপস্থিত ছিলেন। পরে মাহবুব আলম চাষীও আসে। সম্মেলন চলাকালে আর্মির জিপে আসে মেজর আবদুর রশিদ, মেজর ফারুক, মেজর শাহরিয়ার এবং আরও কয়েকজন সেনা অফিসার। সম্মেলন শেষে মোশতাক, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, মাহবুব আলম চাষী, মেজর রশিদ, মেজর ফারুক এবং মেজর শাহরিয়ার মোশতাকের গ্রামের বাড়ি যায়। আসামিদের এই তৎপরতা ছিল গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এসব বৈঠকের আলোচনায় তারা হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে। কাঙ্ক্ষিত প্রমোশন না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার আগে লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ১৯৭৩ সালে কুমিল্লায় ছিল। মেজর ডালিম, ক্যাপ্টেন বজলুল হুদা, মেজর আজিজ পাশা প্রথম ফিল্ড আর্টিলারিতে সেখানে কর্মরত থাকাকালে তাদের সঙ্গে শাহরিয়ারের ঘনিষ্ঠতা হয়। ওই সময়ে ঢাকার লেডিস ক্লাবে মেজর ডালিমের এক আত্মীয়ার বিয়েতে ডালিমের স্ত্রীসহ কয়েকজন লাঞ্ছিত হওয়ার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীর ল্যান্সার ইউনিটের দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টের কিছু অফিসার অন্যান্য র্যাঙ্কের কিছু সেনাসদস্য আওয়ামী লীগ নেতা গাজী গোলাম মোস্তফার বাড়ি আক্রমণ তছনছ করে। ঘটনার পর শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ডালিম, নূর চৌধুরীসহ কয়েকজনের চাকরি যায়। শাহরিয়ার চাকরি ছাড়ার পর ঢাকায় পুরনো টিভি-ফ্রিজ মেরামতের ব্যবসা শুরু করে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানশেরী এন্টারপ্রাইজছিল মেজর ডালিম, মেজর নূর চৌধুরী, আজিজ পাশা, ক্যাপ্টেন বজলুল হুদার ওঠাবসার কেন্দ্র। সেখানে তারা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু অন্য নেতৃবৃন্দের সমালোচনা করত। সময় দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারির মেজর খন্দকার আবদুর রশিদ ভারতে প্রশিক্ষণ শেষ করে এর অধিনায়কের দায়িত্বে যোগদান করায় ডালিম একদিন তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুরো ঘটনা তাকে জানিয়ে প্রতিকারের জন্য সে সাহায্য কামনা করলে রশিদ তাকে সাহায্যের আশ্বাস দেয়
অপরদিকে প্রথম বেঙ্গল ল্যান্সারের দায়িত্ব মেজর মোমিনের কাছে ছেড়ে দিতে হওয়ায় এবং তার অধীনে সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হওয়ায় সৈয়দ ফারুক রহমান ক্ষুব্ধ ছিল। ১৯৭৪ সালের শেষের দিকে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানে ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ নরসিংদীতে তার সঙ্গে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনায় সে আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর বীতশ্রদ্ধ ছিল। তার ওপর ডালিমের স্ত্রীকেন্দ্রিক ঘটনা-পাল্টা ঘটনায় ডালিম, নূরসহ কয়েকজনের চাকরিচ্যুতি ঘটে। তৎকালীন ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আলোচনা চলত। একদিন তিনি ফারুককে বলেছিলেন, দেশ বাঁচানোর জন্য একটা কিছু করা দরকার

তখন গুরুত্ব না দিলেও ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের পর মেজর খন্দকার আবদুর রশিদের সঙ্গে দেশের অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে পূর্ব আলোচনার সূত্রে তারা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে ভিত্তিতেই এপ্রিল মাসের এক রাতে ফারুক জিয়াউর রহমানের বাসায় গিয়ে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলাচনা করে পরামর্শ চায়। জবাবে তিনি বলেছিলেন, আমি কী করতে পারি, তোমরা করতে পারলে কিছু কর। বিষয়টি রশিদকে জানানোর পর পলিটিক্যাল বিষয়টি সে দেখবে বলেছিল। রশিদ পরে আত্মীয়তার সুবাদে খন্দকার মোশতাক এবং জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মেজর খন্দকার রশিদ ঢাকায় আসার পর আর্টিলারির দ্বিতীয় ফিল্ড রেজিমেন্টের একটি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মহিউদ্দিনের সঙ্গে সুযোগ পেলেই রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বলত। ১৯৭৫ সালের মে মাসের মাঝামাঝি একদিন রেজিমেন্ট লাইনে মহিউদ্দিনকে পেয়ে সে তার প্রাইভেট গাড়িতে তাকে হোটেল শেরাটনের পাশে রমনা পার্কের সামনের রাস্তায় নিয়ে যায়। সেখানে ডালিম নূর আসে। চারজন পার্কে গিয়ে ঝোপের আড়ালে কথাবার্তা বলে। ১৩ আগস্ট রাত ১০টা সাড়ে ১০টার দিকে ডালিম এবং নূর শাহরিয়ার রশিদের ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতে যায়। শাহরিয়ারকে তারা খন্দকার আবদুর রশিদের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ডালিম রশিদের আলোচনাকালে রশিদ তাদের জানায়, ডোন্ট ওরি, ফারুকও সঙ্গে আছে। ১৪ আগস্ট বিকেলে খন্দকার আবদুর রশিদ নূর একটি কারে চড়ে শাহরিয়ারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সঙ্গে নিয়ে খন্দকার মোশতাকের আগামসি লেনের বাড়িতে যায়। মোশতাককে পরদিন সকালে বাড়িতে থাকার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে তারা ফিরে যায়। শেরাটনের কাছে নূর শাহরিয়ার গাড়ি থেকে নামে; কিন্তু কথা হয় রাতে আবার দেখা হবে। বিকেল ৪টার দিকে ডালিমকে বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির আশপাশে ঘুরতে দেখা যায়। রাত প্রায় ১০টা নাগাদ ডালিম, আজিজ পাশা, বজলুল হুদা এবং নূর চৌধুরী ক্যান্টনমেন্টে শাহরিয়ার রশিদের বাসায় যায়। সেখানে ডালিম তাদের জানায়, সে চিফ অব জেনারেল স্টাফের কাছ থেকে আসছে। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য আর্মি তলব করা হয়েছে। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে আর্মি মুভ করবে। মুক্তিযোদ্ধা অফিসার হিসেবে সে তাদের সহযোগিতা চেয়েছে। এরপর সে মেজর রাশেদ চৌধুরীকে নিয়ে আসে। শাহরিয়ারের বাসায় খাওয়া-দাওয়ার পর তারা আলোচনায় বসে। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ডিউটিতে অংশ নেবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। সাব্যস্ত হয় মেজর রশিদের দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারির টেকনিক্যাল হেডকোয়ার্টারে রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে তারা একত্রিত হবে। এই আর্টিলারিটি সে সময় নতুন বিমানবন্দর এলাকায় নাইট ট্রেনিংরত ছিল। এদিকে ১৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় মেজর খন্দকার আবদুর রশিদ কমান্ডিং অফিসার হিসেবে তার অফিসে অফিসারদের ডেকে রাতে নাইট ট্রেনিং হবে বলে জানিয়ে দেয়। রেজিমেন্টের সব ব্যাটারি, ফার্স্ট লাইন আর্টিলারি, ফার্স্ট লাইন স্মল আর্মসসহ গোলাবারুদ সন্ধ্যার আগে নতুন এয়ারপোর্টের কাছে বালুরঘাটে যাবে এবং বাকি সব অফিসার ফোর্স ইউনিট লাইনে হাজির থেকে সন্ধ্যায় মার্চ করে টঙ্গী রোড ধরে এয়ারপোর্ট যাবে বলে সে নির্দেশ দেয়। প্রত্যেক অফিসার জওয়ানকে তাদের ব্যক্তিগত হাতিয়ার সঙ্গে নিতে বলা হয়। রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে একে একে দ্বিতীয় ফিল্ড রেজিমেন্টের অফিসার জওয়ানরা এয়ারপোর্টের রানওয়েতে জড়ো হয়। রাত ২টায় তাদের পাঠানো হয় বালুরঘাট পজিশনে। সেখানে উপস্থিত সেনাসদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় সেনাবাহিনী বিদ্রোহ করেছে এবং দেশে সামরিক শাসন জারি হয়েছে। অপরদিকে পার্শ্ববর্তী ল্যান্সার হেডকোয়ার্টারে রাত ১টায় পেঁৗছায় ডালিম, রাশেদ চৌধুরী, হুদা, শাহরিয়ার, রশিদরা। সেখানে সমবেত এসব সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে ল্যান্সার ইউনিটের অস্ত্রাগার থেকে পোশাক অস্ত্র দেওয়া হয়। পশ্চিম পাশের খোলা জায়গায় ইউনিটের ট্যাঙ্কগুলো সারিবদ্ধ রাখা ছিল। ৩টায় সেখানে উপস্থিত হয় দ্বিতীয় ফিল্ড রেজিমেন্টের অফিসাররা। ম্যাপ হাঁটুতে রেখে ক্যাম্প টুলে বসে মেজর ফারুক সময় পাশে দাঁড়ানো মেজর খন্দকার আবদুর রশিদের সঙ্গে অপারেশনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করে। ল্যান্সারের অন্যান্য অফিসার, জেসিও এবং এনসিও পর্যায়ের কর্মকর্তারাও সেখানে সমবেত ছিল। সময় মেজর মহিউদ্দিনের প্রশ্ন তোলায় পরিকল্পনার কথা ফাঁস করে ফারুক সবাইকে উত্তেজিত করতে একটি বক্তৃতা দেয়। একইসঙ্গে পরিকল্পনা অনুযায়ী উপস্থিত অফিসারদের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়। সে বলে, শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বাসঘাতকতা করে দেশে বাকশাল কায়েম করেছেন। সেনাবাহিনীর পাল্টা রক্ষীবাহিনী গঠন করেছেন। চারটি বাদে সব খবরের কাগজ বন্ধ করে দিয়েছেন। গভর্নর নিয়োগ করেছেন। তিনি রাজতন্ত্র কায়েম করছেন। আমরা রাজতন্ত্র সমর্থন করতে পারি না। আর এসব করতে গিয়ে তিনি সেনাবাহিনীর বাজেট কমিয়ে দিয়েছেন। আর্মি বোধহয় থাকবে না। ডিসব্যান্ড হয়ে যাবে। বাংলাদেশে সরকার বদলানোর আর কোনো পথ নেই। চাবি একজন, শেখ মুজিব। তাকে দিয়েপ্রক্লামেশনকরিয়ে যদিচেঞ্জকরা যায়। সে যদি রাজি না হয়, যদিরেজিস্টান্সহয়, দেশ বাঁচবে না। আমরা কেউসার্ভাইভকরব না। কাজেই তাকেএক্সিকিউটকরা লাগবে। পলিটিক্যাল পরিবর্তন যেটা সেটা মেজর রশিদডিলকরবে। খন্দকার মোশতাককে রাষ্ট্রপতি করে রাষ্ট্র চালানো হবে
অপারেশন পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে মেইন অপারেশনের দায়িত্ব মেজর ডালিমকে নিতে বলা হলে মাত্র কয়েকদিন আগে সেখানে সে কর্মরত ছিল বলে অসম্মতি জানায়। পরে দায়িত্ব দেওয়া হয় আর্টিলারির মেজর মহিউদ্দিনকে। বঙ্গবন্ধু যাতে পালাতে না পারেন বা বাইরে থেকে তাকে কেউ উদ্ধার করতে না পারেন, তাই পুরো এলাকা সিল করে দিয়ে সরাসরি কথা বলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসতে বলা হয়। কিন্তু বাধা এলে বা আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হলে নিচে এনেএক্সিকিউটকরার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের সাপোর্ট দিতে আর্টিলারি ট্যাঙ্ক রাখা হয়। রক্ষীবাহিনী বা অপর কোনো পাল্টা আক্রমণ প্রতিহত করতে ফিল্ড রেজিমেন্টকে বিভিন্ন কৌশলগত অবস্থানে মোতায়েন করা হয়। সময় ডালিম জানায়, প্রেসিডেন্টের বাড়িতে প্রথম ফিল্ড রেজিমেন্ট থেকে গার্ড রয়েছে। তারা মহিউদ্দিনকে বাধা দিতে পারে। বজলুল হুদা এর আগে প্রথম ফিল্ড রেজিমেন্টের অ্যাডজুট্যান্ট ছিল বলে সে তাদের ম্যানেজ করতে পারবে ভেবে হুদা, নূর চৌধুরী এবং মেজর মহিউদ্দিনকে একসঙ্গে মূল অপারেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেজর রশিদ দায়িত্ব নেয় জেনারেল জিয়া খন্দকার মোশতাক আহমদসহ অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের। ফারুকের দায়িত্বে থাকে ট্যাঙ্ক। রাশেদ চৌধুরী শাহরিয়াররা থাকে ডালিমের সঙ্গে। তাদের বলা হয় ডালিম যাবে রেডিও বাংলাদেশে, মেজর শাহরিয়ার, মেজর রাশেদ চৌধুরী, ক্যাপ্টেন মোস্তফা এবং ক্যাপ্টেন মাজেদ মিন্টো রোডে আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়িতে ফোর্স মোতায়েন করবে। সেখানে কাজ শেষ করে শাহরিয়ার রেডিও বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে ক্যাপ্টেন মোস্তফাকে আগামসি লেনে খন্দকার মোশতাকের বাড়ি পাহারায় এবেং রিসালদার মোসলেম উদ্দিনকে একজন অফিসারসহ শেখ মণির বাড়িতে পাঠাতে ফারুক নির্দেশ দেয়। মেজর আজিজ পাশাকে পিলখানার বিডিআরদের নড়াচড়া দেখলে সেদিকে অগ্রসর হওয়ার দায়িত্ব দিয়ে ফারুক নিজে অবশিষ্ট ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট সৈন্যদের নিয়ে রক্ষীবাহিনী সামলে দেবে বলে ঘোষণা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোর ৪টায় তাদের যাত্রা শুরু হয়

come to mukthis world and raise your hands against Islamic militants terrorism,war crime loots and corruption.